গঙ্গাসাগর

মেলার উদ্যোগ

গঙ্গানদী ও বঙ্গোপসাগরের সংগমস্থানে অনুষ্ঠিত গঙ্গাসাগর মেলায় সমবেত হয় প্রায় ৩০ লাখেরও দেশী তীর্থযাত্রীদের । মকর সংক্রান্তীর দিন ভারত তথা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রীরা ছুটে আসে মোক্ষলাভের আশায়। এই বিশাল সংখ্যক তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও তাদের সকল বিষয়ে সুবিধার দিকে লক্ষ্য রাখাই আমাদের প্রশাসনের কাছে একটি বিশাল বড়ো চ্যালেঞ্জ। তাই, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে মেলা চলাকালীন বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছেন।

  • তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে থাকবে রিয়েলটাইম মনিটারিং সিস্টেম।
  • সফ্টওয়্যারে থাকবে ওভার-ক্রাউড অ্যালার্ট, ট্রেসপাসিং অ্যালার্ট, ক্রাউড গ্যাদারিং অ্যালার্ট, স্ট্রোক ও ক্রাউড অ্যালার্ট।
  • মেলাপ্রাঙ্গনে তীর্থযাত্রীদের ভিড়কে নিয়ন্ত্রণ করতে থাকবেন পুলিশ ও স্চ্ছোসেবক। এমনকি তাদের সাথে যোগাযোগ করা যাবে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে।
  • তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষার জন্য থাকবে স্মার্ট মনিটারিং টেকনোলজি, যার মাধ্যমে সমগ্র মেলাপ্রাঙ্গনে নজর রাখা হবে।
  • যোগাযোগ পরিষেবাকে সবসময় চালু রাখার জন্য ভি.এইচ্.এফ্ রেডিও টেকনোলজি বসানো হবে, যার নাম সাগর সঞ্চার।
  • টু-ওয়ে ট্রান্সমিশন সিস্টেমের দ্বারা বিভিন্ন এলাকায় অফিসাররা ছড়িয়ে থাকবে।
  • মেলা কন্ট্রোল রুমের ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে ১৫০ জন অফিসাররা ছড়িয়ে থাকবে।
  • মেলা প্রাঙ্গনের বিভিন্ন স্থানে ওয়াই-ফাই বুথ বসানো হবে।
  • তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষার জন্যে সাগরমেলার বিভিন্ন স্থানে সি.সি.টিভি. ক্যামেরা বসানো হবে।
  • মেলার যাত্রাপথে ৫টি ও মেলাপ্রাঙ্গনে ১টি কন্ট্রোল রুম থাকবে।
  • আই.পি, অ্যানালগ ও ড্রোনে সি.সি.টিভি ক্যামেরার দ্বারা সমগ্র মেলাপ্রাঙ্গনকে ২৪ ঘন্টা নজরদারীতে রাখা হবে।
  • সি.সি.টিভি ক্যামেরার দ্বারা ১০টি বাফার জোনের লাইভ ফুটেজ কন্ট্রোল রুমে ২৪ ঘন্টা চলবে।
  • জেলা প্রশাসনের নেওয়া অন্যতম উদ্যোগ ই-স্নান, যার মাধ্যমে ওয়েবসাইটে লাইভ দেখানো হবে গঙ্গাসাগর স্নান ও পূজা। সেটি দেখে দর্শকরা গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করবে, ও সাহী স্নান অনুভব করবে।
  • গঙ্গাসাগর ওয়েসাইট থেকে তীর্থ সামগ্রী প্যাক পাওয়া যাবে। যেখানে গঙ্গাজল, প্রসাদ ও পূজার টিকা দেওয়া হবে। শুধুমাত্র ডেলিভারী চার্জ নেওয়া হবে।
  • অতিথি পথ অ্যাপের মাধ্যমে গঙ্গাসাগর মেলা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য পাওয়া যাবে যেমন- পূজা, জোয়ার-ভাটা, যানবাহন ও ফেরীর ভাড়া ও সময় এবং পথনির্দেশক।
  • এই অ্যাপের দ্বারা গঙ্গাসাগর ওয়েসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ সম্পর্কেও জানা যাবে।
  • এই অ্যাপটি সাগর সুরক্ষা সিস্টেমের সাথে যুক্ত হয়ে তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষার দিকে নজর রাখবে। অ্যাপটি ব্যবহার করার সময় ব্যবহারকারীর সেই সময়ে ভৌগলিক অবস্থান দেখা যাবে। যার ফলে যে কোনো অসুবিধার সময় তার কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
  • মেলা চলাকালীন সমস্ত গাড়ি ও ফেরীর সময় ও তাদের অবস্থান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকার জন্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে থাকবে বাহন ট্র্যাকার।
  • অন ডিউটি বাস ও ফেরী যাতে কোনো স্থানে অযথা দাড়িয়ে না থাকে তার জন্য সমস্ত গাড়িতে জি.পি.এস্. ট্র্যাকার বসানো হবে।
  • অন ডিউটি যানবাহনগুলি যদি কোথাও অযথা দাড়িয়ে থাকে তাহলে সাগর বন্ধুরা তাদের সঠিক রূটে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে।
  • ১৮০০-৩৪৫-২০২০ টোল ফ্রী নম্বর থাকবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ভারতের যে কোনো প্রান্তের মানুষেরা গঙ্গাসাগর সংক্রান্ত কোনো প্রকার জিজ্ঞেসাবাদ থাকলে এই টোল ফ্রী নম্বরে ফোন করতে পারবেন।

    আউটডোর ডিস্প্লে

  • গঙ্গাসাগর মেলার যাত্রাপথের বিভিন্ন স্থানে অর্থাত্ জোকা থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত এল্.ই.ডি. স্ক্রিন বসানো হবে।এই স্ক্রিনে গঙ্গাসাগর সম্পর্কে বিভিন্ন ভিডিও ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্কিম সম্পর্কিত তথ্য দেখানো হবে।
  • ওয়েসাইট অ্যান্ড সোশ্যাল মিডিয়া

  • তীর্থযাত্রীদের সচেতন করার জন্যে গঙ্গাসাগর ওয়েসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন তথ্য জানানো হবে। সোশ্যাল মিডিয়া পেজে গঙ্গাসাগরের বিভিন্ন তথ্য জানানো হবে এবং মেলাপ্রাঙ্গনের লাইভ কভারেজ এই পেজে আপলোড করা হবে।
  • কোনো তীর্থযাত্রীরা যাতে মেলাপ্রাঙ্গনে হারিয়ে না যায় তার জন্য জেলা প্রশাসন পরিচয় নামে একটি জলনিরোদক রিস্ট ব্যাগর ব্যবস্থা করেছে।
  • সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিভিন্ন বাফার জোনে শিশু ও বৃদ্ধদের দেওয়া হবে।
  • যদি কেউ হারিয়ে যায় তাহলে সাগর বন্বুরা রিস্ট ব্যাগ থেকে তার সমস্ত তথ্য বার করে তাকে খুঁজে বার করবে।
  • গঙ্গাসাগর বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথারিটি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা প্রশাসনের মিলিত প্রয়াসে গঙ্গাসাগর মেলাকে ইকো ফ্রেন্ডলি রাখার চেষ্ঠা করা হচ্ছে।
  • ২০২০ সালে গঙ্গাসাগর মেলা থেকে সম্পূর্ণভাবে প্লাস্টিক, থার্মোকল ও কাগজের প্লেট ব্যবহার করা বন্ধ করার পূর্ব-পরিকল্পনা নেওয়া হয়। মেলাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এলাকার কয়েকটি কমিটি ও জেলেদের নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ক্যাম্পেন করা হয়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন আপনাদের সকলকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত মিলনতীর্থ গঙ্গাসাগর ২০২০ শুভেচ্ছা জানায়।