গঙ্গাসাগর শুধুমাত্র তীর্থস্থান নয়, গঙ্গাসাগর আবেগ, সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের এক মহামিলন স্থল যেখানে অগনিত কাল ধরে মানুষ বিশ্বাস ও ভক্তির উৎসব উদযাপন করে। প্রাচীন কাল থেকেই ধর্ম এদেশের সংস্কৃতিতে মিশে রয়েছে, মকর সংক্রান্তির সময় অনুষ্ঠিত গঙ্গাসাগর মেলাও তার ব্যতিক্রম নয়। ভারতীয় সংস্কৃতিতে মকর সংক্রান্তির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগর মেলার উদযাপন ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্কৃতির এক কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে যা সবাইকে একসূত্রে আবদ্ধ করে।

বিশ্বাস করা হয়, মকর সংক্রান্তিতে সূর্য মকর রাশিতে স্থানান্তরিত হওয়ার পরে সমস্ত নেতিবাচকতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং ইতিবাচক সময়ের সূচনা হয়। শীতের শেষ এবং বসন্তের শুরু হয় এবং দিন দীর্ঘ ও রাত ছোট হতে থাকে। ক্ষেতের ফসল কাটা শুরু হয় এবং নতুন শস্য বপন শুরু হয়। ভারতবর্ষ যেহেতু কৃষিপ্রধান দেশ তাই এই সময়ে মকর সংক্রান্তির উৎসব সূর্যদেবের প্রতি কৃতজ্ঞতা পালনের উৎসব হিসাবেও পালিত হয়। সারা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকেরা এই সময় নিজেদের জমি,গবাদি পশু ও সরঞ্জামেরও বিধিবৎ পূজা করে।

এই সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎসব পালনের অঙ্গ হিসাবে বিভিন্ন সুস্বাদু খাদ্যও প্রস্তুত করা হয়। তিল এবং গুড় দিয়ে বিভিন্ন মিষ্টান্ন প্রস্তুত করা হয়। তবে এই উদযাপন শুধুমাত্র খাদ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এই সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সংস্কৃতির একটি আবশ্যিক অঙ্গ ঘুড়ি ওড়ানো। মূলত উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতি হলেও পরে এই আনন্দ উৎসব দেশের সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে।

এএককথায় বলা যায়, মকর সংক্রান্তি উৎসব ও গঙ্গাসাগর মেলা ভারতবর্ষের সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার এক অপরিহার্য অংশ যা সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে একত্রিত করে।