

গঙ্গাসাগর, বাংলার প্রাচীনতম ও বৃহত্তম এক মহাতীর্থ যার উল্লেখ ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারতে পাওয়া যায় যা প্রায় ৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেরও বেশি প্রাচীন। প্রাচীন লোককথা অনুযায়ী, ৪৩০ খ্রিস্টাব্দে গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির মন্দির প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন রানী সত্যভামা এবং ১৪৩৭ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরের বর্তমান আরাধ্য মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করেন স্বামী রামানন্দ। অনাদি কাল থেকে বহমান এ এক মহান ঐতিহ্য, যার ধ্বজা আজও লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগমে জাজ্বল্যমান।
পৌরাণিক
তাৎপর্য
গঙ্গাসাগর তীর্থের কাহিনী মোক্ষপ্রাপ্তির কাহিনী। জীবন ও মৃত্যুর বৃত্ত থেকে মুক্তির কাহিনী। বিভিন্ন পুরাণ থেকে জানা যায়, কিভাবে রাজা ভগীরথ সাধনার দ্বারা পবিত্র গঙ্গা নদীকে সাগরে নিয়ে এসে তাঁর ৬০,০০০ পূর্বপুরুষকে কপিল মুনির অভিশাপ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন।
সামাজিক
তাৎপর্য
গঙ্গাসাগর শুধুমাত্র তীর্থস্থান নয়, অনাদিকাল থেকে অসংখ্য মানুষের আবেগ ও বিশ্বাসের মিলনস্থল। বছরের এই বিশেষ সময়ে ভারতবর্ষের বেশ কিছু স্থানে ক্ষেত থেকে ফসল তুলে আনার সময়, আবার নতুন ঋতু শুরুর সময়। যুগ যুগ ধরে মকর সংক্রান্তিতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ এই মহাতীর্থে এসে সার্বিক শুভকামনায় সূর্যদেবের পূজা করে।


অতিমারীর কঠিন সময়কে পিছনে ফেলে গঙ্গাসাগর মেলাকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা প্রশাসনের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ ই-স্নান। ২০২০ সালে কোভিড যখন সাময়িক ভাবে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল, সেই সময়ে এই উদ্যোগ প্রথমবার শুরু হয়। সারা বিশ্ব যদিও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই জারি রেখেছিল কিন্তু ই-স্নান কখনও কোনও বাধার সম্মুখীন হয়নি। যে সকল পুণ্যার্থী কখনও গঙ্গাসাগর দর্শন করেননি, এই বিশেষ উদ্যোগ তাদের বাড়ির দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিল গঙ্গাসাগরের পুণ্যবারি ও মহাপ্রসাদ। এখন দ্রুত অনলাইনে বুক করুন ই - স্নান এবং গঙ্গাজল, গঙ্গামাটি, মহাপ্রসাদ ও বই সমন্বিত পবিত্র প্যাকেজ নিজের বাড়িতে সংগ্রহ করে আধ্যাত্মিক আনন্দ উপভোগ করুন।




অনুভব করুন সেই মহান আধ্যাত্মিক অনুভূতি ই- পূজার সাথে
ই - পূজা এক বিশেষ উদ্যোগ যার দ্বারা ভক্তেরা ঘরে বসে কপিল মুনির আশীর্বাদ অনুভব করতে পারবেন। গঙ্গাসাগরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের ই - পূজা পেজে এসে নিজের নাম ও গোত্র দিয়ে নুন্যতম মূল্যের বিনিময়ে পূজা বুক করুন। আপনার নাম উল্লেখিত পূজার প্যাকেটে থাকবে কপিল মুনির মহাপ্রসাদ ও আশীর্বাদী ফুল যা সরাসরি পৌঁছে যাবে আপনার বাড়ির দোড়গোড়ায়।

বলা হয়, গঙ্গাসাগর এমন এক মহাতীর্থ যার আকাশে,বাতাসে ছড়িয়ে থাকে আধ্যাত্মিকতা। আসুন, ভক্তির এই পুণ্যসাগরে অবগাহন করুন এবং অনুভব করুন সেই অতীন্দ্রিয় মোক্ষের স্পর্শ।

সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার
যদি আপনি এই প্রবাদটি শুনে থাকেন, তাহলে নিশ্চিত বুঝতে পেরেছেন, কত অবর্ণনীয় কষ্ট পার করে পুণ্যার্থীরা এই মহাতীর্থে এসে পৌঁছন সাগরসঙ্গমে ডুব দিয়ে মোক্ষ প্রাপ্তি করবেন বলে। হাজার বছর ধরে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে তারা এই মহাতীর্থে আসেন নিজেদের পাপ থেকে মুক্তি পেতে। বর্তমানে গঙ্গাসাগর তীর্থপথের অনেক উন্নতি হলেও আগে এই পথ কতটা বিপজ্জনক ছিল তার আভাস পাওয়া যায় খনার এই বিখ্যাত বচনে,যার অর্থ হল, বাকি সব তীর্থে বারবার যাওয়া গেলেও গঙ্গাসাগর তীর্থে একবার পৌঁছনোই বড় ব্যাপার।

